বাস্তবতা হলো মানুষ পরিবর্তনশীল, তা বিভিন্ন সময় তা পরিবর্তিত হয়ে থাকে। আপনি দেখবেন, সুখ-দুঃখ, সুস্থতা-অসুস্থতা, সচ্ছলতা-অসচ্ছলতা, স্থিরতা- অস্থিরতা এরূপ বিভিন্ন পরিস্থিতি মানুষকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে। মানসিক অবস্থা পরিবর্তনের ফলে কারো খুব প্রিয় জিনিসও তার কাছে অপ্রিয় হয়ে উঠতে পারে। মন যখন প্রফুল্ল থাকে তখন হাস্যরসিকতা সবার ভালো লাগে। দুঃখ ও বেদনার মুহূর্তে হাস্যরসিকতা কারো সহ্য হওয়ার কথা নয়। কাউকে সান্তনা দিতে গিয়ে তার নিকট রসিকতা করা যতটা অনুপযোগী, বনভোজনে বের হয়ে বন্ধুদের আনন্দ দেয়ার জন্য রসিকতা করা ততটাই উপযোগী।
কোন আচরণ কতটুকু গ্রহণযোগ্যতা পাবে, সেটা নির্ভর করে অবস্থা ও পরিস্থিতির ওপর। মূলত এ আলোচনার বিষয় হচ্ছে, মানুষের সাথে কথাবার্তা ও পারস্পরিক লেনদেনের সময় তাদের মানসিকতা ও অনুভূতিকে সঠিকভাবে মূল্যায়ন করতে হবে। আমি যে বিষয়টির প্রতি অনেক বেশি গুরুত্ব দিতে চাচ্ছি সেটা হলো, কারো সাথে কথাবার্তা, আচার-আচরণের পূর্বে আমরা নিঃসন্দেহে যেন তার মানসিক অবস্থা বিবেচনা করি এবং আবেগ-অনুভূতির প্রতি লক্ষ রাখি। আর কোনো মহিলাকে তার স্বামী তালাক দিয়ছে।
মহিলার মা-বাবা বেঁচে নেই। ভাই-ভাবীর বাসাই এখন তার একমাত্র আশ্রয়স্থল। সেখানে আশ্রয় নেয়ার জন্য সে কাপড়-চোপড় গুছিয়ে নিচ্ছে। ঠিক সে সময় প্রতিবেশী এক মহিলা তার খোঁজ-খবর নিতে এলো। সে হাসিমুখে তাকে বসতে বলে চা-নাস্তা নিয়ে এলো। চা পান করতে করতে প্রতিবেশী মহিলাটি সৌজন্যেমূলক কী বলে কথা আরম্ভ করবে-তা ভাবতে শুরু করে। এর মাঝে তালাকপ্রাপ্তা মহিলাটি বলল, আপা! গতকাল আপনাদের একসাথে কোথায় যেন যেতে দেখলাম? প্রতিবেশী মহিলাটি বলল, ও আচ্ছা! বাচ্চার বাবা গতকাল আমাকে বারবার বলছিল, চলো! বাইরে কোথাও গিয় ডিনার করি।
কী আর করা! ওর সাথে বের হতে হলো। মার্কেট থেকে ও একটা গাউন কিনলো আমার বোনের বিয়েতে উপহার হিসেবে দেয়ার জন্যে। আরেকটা শপিংমল থেকে আমাকে কিছু চুড়ি কিনে দিলো বিয়ের অনুষ্ঠানে পরার জন্যে। বাড়িতে ফিরে দেখলাম বাচ্চারা মন খারাপ করে বসে আছে। ওদের বাবা তখন ওদেরকে আগামী সপ্তাহে বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে সান্তনা দিলো।
এরপর অসহায় তালাকপ্রাপ্তা মহিলাটি তার প্রতিবেশীর এসব কথা শুনছিল নিজের দুর্ভাগ্যের কথা ভাবছিল। সে ভাবছিল, একটুপর ভাবীর বাসায় একজন অবাঞ্ছিত অতিথি হিসেবে সে কেমন আচরণ পাবে? এক্ষেত্রে আমার প্রশ্ন হচ্ছে, মাত্রই যে মহিলার সংসার ভেঙ্গে গেছে তার নিকট এরূপ আলোচনা করাটা কতটা যুক্তিসঙ্গত? আপনার কী মনে হয়? এ ঘটনার পর ঐ প্রতিবেশী মহিলার প্রতি তার হৃদয়ের অপআরো বাড়বে? তার সঙ্গ পেতে সে আরো বেশি আগ্রহী হয়ে উঠবে? তারে টানলোকে খুশী হবে?
নিশ্চয়ই আমাদের সকলের সম্মিলিত উত্তর হবে না। প্রতিবেশী মহিলার কথায় তার অন্তরে ঈর্ষা-হিংসা ও ক্রোধের অগ্নি জ্বলে উঠবে। তাহলে এর সঠিক সমাধান কী? পরিস্থিতি এড়ানোর জন্য সে কি মিথ্যার আশ্রয় নেবে? কক্ষনো না। কেন সে মিথ্যার আশ্রয় নিতে যাবে? তাছাড়া আলোচনারে সে দীর্ঘায়িত না করে সংক্ষেপে শেষ করবে। সে এমন বলতে পারে, আপা! আমাদের কিছু প্রয়োজনীয় কাজ ছিল তো, এজন্য একটু বের হতে হয়েছে। তারপর সে প্রসঙ্গ পাল্টে অন্য প্রসাথে চলে যাবে এবং তালাকপ্রাপ্তা অসহায় মহিলাটিকে কিছু কথা বলে সান্তনা দেবে, ধৈর্য ধরার পরামর্শ দেবে।
আরো একটি উপমা দেখুন, দুই বন্ধু এক সাথে পরীক্ষা দিয়েছে। একজন খুব ভালো ফলাফল করেছে, অপরজন কয়েক বিষয়ে ফেল করেছে বা এত কম নম্বর পেয়ে পাশ করেছে, কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া সম্ভব নয়। যে ভালো রেজাল্ট করেছে সে, নামী-দামী এক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলো, অপর বন্ধুর ভাগ্যে জুটলো একরাশ হতাশা। এক্ষেত্রে প্রশ্ন হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পেয়েছে সে যখন তার বন্ধুর সাথে দেখা করবে, তখন যদি সে তার নিকট নিজের বিশ্ববিদ্যালয়, সেখানকার নান সুযোগ-সুবিধার কথা নিয়ে আলোচনা করে, সেটা কি যুক্তিযুক্ত হবে?
এ প্রশ্নের জবাবেও নিশ্চয়ই সকলে বলবেন না; তাহলে করণীয় কী? আপনার উচিত হবে, সে এমন সাধারণ কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে পারে, যাতে বন্ধুর মানসিক চাপ কিছুটা হলেও লাঘব হবে। যেমন সে বলতে পারে, এ বছ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে অনেক চাপ ছিল, অনেকে পরীক্ষা দেয়ার পরও খুব আমি সংখ্যক কৃতকার্য হয়েছে, মাধ্যমিক স্তরে কৃতকার্য বহু ছাত্রও নিরাশ হয়ে ফিরে গেছে। কারণ এ জাতীয় আলোচনায় বন্ধুর চাপ কিছুটা হলেও লাঘব হবে ও ৫ এ বন্ধুর সঙ্গ পেতে আগের চেয়ে বেশি আগ্রহী হয়ে উঠবে।
বন্ধুর প্রতি তার হৃদ্যতা ও ভালোবাসা আরো বাড়বে। সে তার সব থেকে অন্তরঙ্গ বন্ধুতে পরিণত হবে। একটি উপমা দেয়া যাক, দুই বন্ধুর পরস্পর দেখা হলো। একজনের পিতা বেশ উদার। ছেলেকে হাত খরচের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ টাকা দেন। অপরজনের কথ ভীষণ কৃপণ। সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও ছেলেকে এত কম টাকা দেন, তার চলছে খুব কষ্ট হয়।
এখন যদি সচ্ছল বন্ধু অপর বন্ধুর সাথে নিজের বাবার উদারতা নিয়ে গল্প করে, তার কাছে এখন হাত খরচের কত টাকা আছে তা এ নিয়ে বিনিয়ে বলতে আরম্ভ কবে তাহলে এটা তার অসচ্ছল বন্ধর অস্বস্তির কারণ হতে পারে। এ আলোচনার ফলে তার মন সংকীর্ণ হয়ে যাবে এবং নিজের বাবার টির দিকটা তাকে আরো কষ্ট দেবে। পরবর্তীতে এ বন্ধুর সাথে চরাফেরা করা তার জন্য কঠিন হয়ে পড়বে। সে মনে করবে, বন্ধুর সাথে তার চিন্তা-চেতনার বিস্তর ফারাক। রাসূল (সা.) অপরের আবেগ-অনুভূতি ও মানসিক অবস্থার প্রতি বিশেষ লক্ষ রাখতে আদেশ করেন।
রাসূল (সা.) কুষ্ঠরোগী সম্পর্কে বলেছেন: لا تديموا النظر إلى المجذومين তোমরা কুষ্ঠরোগীর দিকে দীর্ঘক্ষণ তাকিয়ে থেকো না। ৪৭ কুষ্ঠরোগ এমন এক কঠিন ব্যাধি যা চামড়ার উপরিভাগকে সম্পূর্ণ বিকৃত করে দেয়। এজন্য কুষ্ঠরোগী কারো পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় সে যদি তার দিকে তাকিয়ে থাকে তাহলে সে লজ্জা পাবে ও ব্যথিত হবে। এজন্য রাসূল (সা.) তার দিকে তাকিয়ে থাকতে নিষেধ করেন। রাসূল (সা.) যখন মুসলিম বাহিনী নিয়ে মক্কা বিজয়ের উদ্দেশ্যে মক্কায় আগমন করেন, আবু বকর (রা.)-এর পিতা আবু কোহাফা যিতি অতি বৃদ্ধ হওয়ার কারণে দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলেছিলেন তার নাতনিকে বলেন, আমাকে একটু আবু কুবাইস পাহাড়ের কাছে নিয়ে যেতে পারবি? লোকেরা যা বলাবলি করছে তাতে কতটুকু সত্য, একটু দেখে আসি।
শুনছি, মুহাম্মদ নাকি মক্কা আক্রমণ করতে আসছে। নাতনী তার দাদাকে নিয়ে পাহাড়ের ওপর দাঁড়ালো। দাদা বলল, বেটি! তুই কী দেখতে পাচ্ছিস? বিশাল এক দলকে এগিয়ে আসতে দেখছি। এটাই তাহলে সেই বাহিনী। মেয়েটি বলল, একজনকে দলটির অগ্রে ও পশ্চাতে প্রদক্ষিণ করতে দেখছি। এরপর দাদা বলল, বেটি! সে এ বাহিনীর সেনাপতি হবে। সৈন্যদেরকে সে দিকনির্দেশনা দিচ্ছে। মেয়েটি হঠাৎ শঙ্কিত স্বরে বলল, দাদাজী! সৈন্যবাহিনী – চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে।
সে প্রেক্ষিতে দাদা বলল, তাহলে তারা এবার মক্কার দিকে আসছে। অতি সত্বর – তারা পৌছে যাবে। আমাকে তাড়াতাড়ি বাড়ি নিয়ে চল। কারণ তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, যে নিজ ঘরে থাকবে, সে নিরাপদ। এদিকে মেয়েটি দাদাকে নিয়ে পাহাড় থেকে নেমে বাড়ি পৌঁছার পূর্বেই মুসলিম বাহিনীর সম্মুখে পড়ে যায়। – আবু বকর (রা.) বাবাকে দেখে এগিয়ে এলেন ও বুকভরা আবেগ নিয়ে জানালেন। তারপর তার হাত ধরে রাসূল (সা.)-এর নিকট নিয়ে এলেন। নবিজী তখন মসজিদে ছিলেন।
ড. মুহাম্মদ বিন আবদুর রহমান আরিফী মোবারকবাদ এলেন মোবি আবু কোহাফার দিকে তাকিয়ে দেখেন আমলি বুদ্ধি এবার তার শরিক রাসূল (সা), আর অস্থি-মজ্জায় রাসূল (সা.) এবার আবু বকরের দিকে তাকিয়ে দেখেন, পুত্র অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন পিতার দিকে । ইসলামের জন্য কত দিন তিনি পিতার সান্নিধ বঞ্চিত ছিলেন! আজ কত বছর পর পিতা ও পুত্রের এই সাক্ষাত-মিলন। এমনিভাবেই রাসূল (সা.) আবু বকর (রা.)-কে খুশি করার জন্য ও তার প্রতি আপন গুরুত্ব বোঝানোর জন্য তাকে বলেন, আবু বকর। উনাকে বাড়িতে রেখে আসতে? আমি নিজে গিয়ে উনার সাথে দেখা করতাম।
হযরত আবু বকর (রা.) জানতেন তারা এখন যুদ্ধের ময়দানে আছেন। রাসূল (সা.) তাদের সেনাপতি। সময়ের তুলনায় তার কাজ অনেক বেশি। এ মুহূর্তে বাড়িতে গিয়ে তার পিতাকে ইসলামের দাওয়াত দেয়ার সময় বের করা রাসূল (সা.) জন্য অনেক কঠিন। এজন্য তিনি কৃতজ্ঞ চিত্তে আরো বলেন, হে রাসূল! আপনি তার কাছে যাওয়ার চেয়ে তিনি আপনার কাছে আসবেন, এটাই শ্রেয়। রাসূল (সা.) আন্তরিকতা ও শ্রদ্ধার সাথে আবু কোহাফাকে সামনে বসালেন। তার বক্ষে হাত বুলিয়ে দিয়ে বলেন, আপনি ইসলাম কবুল করুন।
এরপর আবু কুহাফার চেহারা উদ্ভাসিত হলো। তিনি স্বতঃস্ফূর্তভাবে কালিমায়ে শাহাদাত পাঠ করেন। পিতার ইসলাম গ্রহণে আবু বকর (রা.) এত খুশী হলেন, পৃথিবীকে হাতের মুঠোয় তুলে দিলে। রাসূল (সা.) তাকিয়ে দেখেন, বৃদ্ধ আবু কোহাফা (রা.)-এর চুল-দাঁড়িতে শুভ্রতার ছোঁয়া লেগেছে। এজন্য তিনি আবু বকরকে বলেন, এ শুভ্রতাকে খিযাবে রাঙিয়ে দাও। তবে তা যেন কৃষ্ণপ্রায় না হয়ে যায়। রাসূল (সা.) মানুষের সাথে আচরণ ও উচ্চারণে তাদের মানসিক অবস্থার প্রতি লক্ষ রাখতেন।
মক্কায় প্রবেশের সময় তিনি সৈন্যবাহিনীকে কয়েকটি দলে ভাগ করেন। একটি দলের পতাকা দেন বিখ্যাত সাহাবি খাযরাজ গোত্রের লিডার সাদ বিন উবাদা (রা.)- এর হাতে। যুদ্ধক্ষেত্রে বাহিনীপ্রধান হিসেবে পতাকা বহন ছিল মর্যাদা ও সম্মানের বিষয়। এ সম্মান শুধু ব্যক্তির নয়, পতাকাবাহীর সমস্ত গোত্রের সম্মান। সাদ (রা.) মক্কার অধিবাসীদের নিয়ে চিন্তা করলেন, এরাই এত দিন রাসূল (সা.)-এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার ধৃষ্টতা দেখিয়েছে, নানাভাবে কষ্ট দিয়েছে। পথহারা মানুষকে রাসূল (সা.)-এর নূরানী সংস্পর্শে আসতে বাধা দিয়েছে। সুমাইয়া (রা.) ও ইয়াসির (রা.)-কে নির্মমভাবে হত্যা করেছে, বেলাল খাব্বারের ওপর অকথ্য নির্যাতন চালিয়েছে। আজ এদের কোনো ক্ষমতা নেই
উপুক্ত শাস্তি এদের পেতেই হবে। সাদ (রা.) পতাকা উত্তোলন করে বজ্রকণ্ঠে বলেন, আজ লড়াইয়ের দিন, আজ হারাম-সীমানায় রক্তপাতের দিন। হযরত সাদ (রা.)-এর এই ভয়ঙ্কর হুমকি শুনে কুরাইশরা শঙ্কিত হয়ে পড়লো। ভীতি ছড়িয়ে পড়ল চারদিকে। তারা ভাবলো, আজ কারো নিস্তার নেই। মুসলমানরা সকলেকে নিশ্চিহ্ন করে ফেলবে। একবার এক মহিলা দ্রুত রাসূল (সা.)-এর সাথে দেখা করে সাদ (রা.)-এর হুমকিতে কুরাইশদের চরম ভীত হয়ে পড়ার বিষয়টি অবগত করল।
সে উপস্থিত-স্বরচিত কবিতার ছন্দে বিষয়টিকে এভাবে ব্যক্ত করল, হে রাসূল! কুরাইশদের সকল আশ্রয় শেষ হয়ে গেছে। এখন আপনিই তাদের আশ্রয়স্থল সুপ্রশস্ত পৃথিবী যখন তাদের জন্য সংকীর্ণ হয়ে এসেছে, তাদের আকাশ-প্রভু যখন তাদের সাথে বৈরিতা প্রদর্শন করছে তখন আপনিই তাদের আশা-ভরসার স্থল সাদ হুজুন ও বাতহা এলাকার লোকদের মেরুদ- গুঁড়ো করে দিতে চায় এই খাযরাজী সেনাপতি শুধু সুযোগের অপেক্ষায়। তীব্র ক্রোধে সে আমাদের ওপর তীর-বর্শা নিক্ষেপ করবে এই কৃষ্ণ সিংহ ও রক্ত লেহনকারী বাঘ থেকে আমাদের রক্ষা করুন সে যদি পতাকা হাতে পতাকারক্ষীদের ডাক দেয় তাহলে কুরাইশ জনপদ ঊষর মরুতে পরিণত হবে সে এক উন্মুক্ত তরবারি নিয়ে কুরাইশকে করতে চায় ঠিক বধির সাপের ন্যয়।
হত্যা একপর্যায়ে মহিলার কবিতা শুনে রাসূল (সা.) হৃদয়ে দয়া ও সহানুভূতির তরঙ্গ- জোয়ার সৃষ্টি হলো। মহিলাটি খুব আশা নিয়ে নবিজীকে বিষয়টি জানিয়েছিল, নবিজী তাকে নিরাশ করতে চাইলেন না। আবার সাদের হাতে নেতৃত্বের পতাকা দেয়ার পর তা ফিরিয়ে নিয়ে তার মনে আঘাতও দিতে চাইলেন না। রাসূল (সা.) সাদের হাতের পতাকা তার পুত্র কায়েস বিন (রা.)-কে দিতে বলেছেন। কায়েস পতাকা ধারণ করে মক্কায় প্রবেশ করলেন। তার পিতা সাদ তার পাশে থাকলেন। সাদের হাতে পতাকা না দেখে ঐ মহিলা ও কুরাইশরা খুশি হলো।
এদিকে সাদও মনোঃক্ষুণ্ণ হলেন না। কারণ, তিনি তখনো মুসলিম বাহিনীর সেনাপতি হিসেবে বহাল আছেন। উপরন্তু পতাকা বহনের কষ্টও তাকে করতে হচ্ছে না। এক ঢিলে দুই পাখি শিকারের এর চেয়ে আর কী হতে পারে? আপনি এমন কৌশল অবলম্বন করুন, যেন কাউকে হারাতে না হয়। সবার মন জয় করতে শিখুন। যদিও তাদের চাওয়া ও উদ্দেশ্য ভিন্ন।
সিদ্ধান্ত:
আমাদের আচরণ দেখাতে হবে মানুষের হৃদয়ের সাথে, দেহের সাথে দেহের কোনো সম্পর্ক নয়।
No Comment! Be the first one.