চুলের যত্ন হোক প্রতিদিন। কিন্তু এত সময় কার আছে, বলুন তো? সপ্তাহে অন্তত একবার হেয়ার প্যাক ব্যবহার করার সময়ই তো হয়ে ওঠে না। কিন্তু আমি যদি বলি চুলের যত্ন সম্ভব প্রতিদিনই? হ্যাঁ, চুলের যত্ন সম্ভব প্রতিদিনই।
কিন্তু পরিবর্তন আনতে হবে অভ্যাসে। ঘুম থেকে উঠার পর থেকে আগ পর্যন্ত, মেনে চলতে হবে ছয়টি বিষয়। আজকের এই আর্টিকেলটিতে কথা বলব ছয়টি বিষয় নিয়ে, যা আপনার চুলকে রাখবে সুন্দর ও স্বাস্থ্য উজ্জল।
সঠিকভাবে প্রতিদিনই হোক চুলের যত্ন
ঘুম থেকে উঠেই জলদি নিজের কাজে ব্যস্ত হয়ে গেলাম। কিন্তু ঘুম থেকে ওঠার পরে চুল একেবারে এলোমেলো হয়ে আছে অথবা জট বেঁধে আছে। ঘুম থেকে ওঠার সাথে সাথে নিজের চুল পরিপাটি করে আচড়ে নিন।
আমাদের চুলে সারারাত যে ন্যাচারাল সিবাম তৈরি হয়, চুল আচড়ানোর ফলে তা পুরো চুলে ছড়িয়ে পড়ে। তাই ঘুম থেকে ওঠার পর ঠিকভাবে মাথার ওপর থেকে নিচ পর্যন্ত দুই থেকে তিন মিনিট চুল আঁচড়ে নিন।
চুলের যত্নে চিরুনির কিন্তু অনেক বড় ভূমিকা রয়েছে। আমাদের দাদী নানীদেরকে দেখা যেত, তারা চুলের যত্নে কাঠের চিরুনি ব্যবহার করত। এবং তাদের চুল হতো বেশ ঘন, কালো এবং স্বাস্থ্য উজ্জ্বল।
কাঠের চিরুনি স্কাল্পের রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। অর্থাৎ আমাদের স্কাল্পে যে ন্যাচারাল সিবাম তৈরি হয়, তা পুরো চুলে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে চুল থাকে ঝলমলে ও সুন্দর।
চুল ধুয়ে নিন
বাইরের ধুলো বালি এবং ময়লা পুষ্টি হীনতার কারণে, আমাদের চুলে দেখা যায় নানারকম সমস্যা। আর এই কারণেই আমরা অনেকেই ডেইলি শ্যাম্পু করে থাকি। কিন্তু এ কারণে যা হয় আমাদের স্কাল্পে যে ন্যাচারাল ওয়েল প্রডিউস হয়, তা কিন্তু ধুয়ে যায়। তবে চুল অপরিষ্কার থাকাও কিন্তু বেশ ক্ষতিকর।
তাই সে ক্ষেত্রে চুলের প্রয়োজন ও ধরন অনুযায়ী শ্যাম্পু বাছাই করা। যাদের নরমাল হেয়ার, তারা সপ্তাহে তিনবার শ্যাম্পু করতে পারে। আবার যাদের অনেক বেশি রাফ হেয়ার, সেক্ষেত্রে তারা দুদিন পরপর শ্যাম্পু করতে পারেন।
আর যাদের অয়লি হেয়ারের প্রবলেম, তারা একদিন পরপর শ্যাম্পু করতে পারেন। তবে শ্যাম্পু করা না হলেও একটা বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। পানি দিয়ে চুল ধুলেও যেন চুল ভালোভাবে পরিষ্কার হয়। এবং গোসলের সময়ে কখনোই গরম পানি ব্যবহার করবেন না চুলে।
ভেজা চুলের যত্ন
আমরা অনেকেই একটি ভুল কাজ করে থাকি। আর সেটা হলো গোসলের পরপরই চুল আছড়ে ফেলা। এটা কিন্তু চুলের জন্য বেশ ক্ষতিকর। কারণ এই সময় আমাদের চুলের গোড়া নরম থাকে। যার ফলে চুল পড়ে যাওয়া সম্ভাবনা আরো বেড়ে যায়। তাই গোসল করার পর পর তোয়ালে দিয়ে হালকা করে চুল মুছে নিন। অথবা তোয়াল দিয়ে হালকা ভাবে চুল পেঁচিয়ে নিন। এরপর চুল কিছুটা শুকিয়ে গেলে তখন আঁচড়ে নিতে পারেন।
হেয়ার প্রোডাক্ট বাছাই করা
সব সময় চুলের টাইপ অনুযায়ী চুলের প্রোডাক্ট ব্যবহার করুন। আপনার চুল নরমাল, ড্রাই, অয়েলি অথবা যেমনই হোক না কেন, সে অনুযায়ী সব সময় শ্যাম্পু বা কন্ডিশনার বাছাই করুন। শ্যাম্পু করার সময় মাথার চুলে গোড়ার অংশে হালকা করে মাসাজ করুন।
এরপর কন্ডিশনার ব্যবহার করতে ভুলবেন না যেন। তবে একটি বিষয় অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে। কন্ডিশনার কখনোই যেন স্কাল্পে ব্যবহার না করা হয়। এতে চুলের গোড়া আরো নরম হয়ে যাবে। পাশাপাশি চুল পড়া আরো বেড়ে যেতে পারে।
এবং শ্যাম্পু করার পর অবশ্যই খেয়াল রাখুন চুল যেন পুরোপুরি পরিষ্কার হয়ে থাকে।
রাতে চুলের যত্ন
রাতে ঘুমাতে যাওয়ার সময় আমরা যে নাইট কেয়ার স্কিন রুটিন ফলো পড়ে থাকি। ঠিক তেমনি হেয়ার কেয়ার রুটিন ফলো করা জরুরী। সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে যেমন চুল আঁচড়ানো প্রয়োজন। ঠিক তেমনি ঘুমোতে যাওয়ার আগেও চুল আঁচড়ে নিন।
ঘুমোতে যাওয়ার আগে কখনোই চুল খোলা রেখে ঘুমোতে যাবেন না। এতে করে বালিশের সাথে চুলের ঘর্ষণের ফলে, চুল পড়া বেড়ে যেতে পারে। এজন্য ঘুমোতে যাওয়ার আগে চুল বেণী করে ঘুমাতে যেতে পারেন। রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে সপ্তাহে দুইবার মাথায় তেল ব্যবহার করতে পারেন।
এতে ব্লাড সার্কেলেসন ইম্প্রুভ হবে এবং চুল থাকবে স্বাস্থ্য উজ্জ্বল। তবে চুলের যত্নের প্রতিদিন এই ছোট্ট বিষয়গুলো খেয়াল রাখুন। এর পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে পানি এবং পুষ্টিকর খাবার রাখুন। আমি আবারো চলে আসবো নতুন কোন আর্টিকেল নিয়ে, আল্লাহ হাফেজ।
No Comment! Be the first one.