চুলের ক্ষতি করে এমন চারটা কাজ কখনো করা উচিত নয়। অনেক বদ অভ্যাসের কারণে চুল পড়তে পারে। আজকের এই আর্টিকেলটিতে আলোচনা করব, যে চারটি অভ্যাসের কারণে চুল পড়ে যায়। আশা করি সম্পূর্ণ আর্টিকেলটা মনোযোগ সহকারে পড়বেন কেননা, এই চারটা অভ্যাসের মধ্যে শেষটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
১. ভেজা চুল নিয়ে ঘুমাতে যাবেন না
ভেজা চুল নিয়ে ঘুমাতে গেলে আপনার মাথা চুল পড়ে যেতে পারে। কারণ চুল যখন ভেজা থাকে তখন চুল স্বাভাবিকের তুলনায় দুর্বল হয়ে পড়ে। অর্থাৎ চুলে যদি ঘর্ষণ বা মৃদু চাপও পড়ে তাহলে চুল ভেঙ্গে যাওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাছাড়া ভেজা চুলে সহজে ব্যাকটেরিয়া বা ছত্রাক জন্ম নিতে পারে, তর্কে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
এর পাশাপাশি যদি আপনি ভেজা চুল নিয়ে নিয়মিত ঘুমান, তাহলে আপনার মাথা তর্কে খুশকি, চুলকানি এবং ফাঙ্গাল ইনফেকশন হতে পারে। যা চুলের গোড়া আরও দুর্বল করে দেয়। যার ফলে চুলের ঘনত্ব কমে যাওয়ার পাশাপাশি চুল পড়তে শুরু করে।
এ থেকে বাঁচার জন্য অবশ্যই চুলকে প্রাকৃতিকভাবে শুকিয়ে নেওয়া উত্তম। কারণ এতে করে চুলে সৌন্দর্য ও স্বাস্থ্য ভালো থাকে।
২. রাবার ব্রান্ড দিয়ে চুল বাঁধলে
চুল পড়ে যাওয়ার আরেকটি অভ্যাসের কারণ হচ্ছে রাবার ব্র্যান্ড দিয়ে চুল বাধা। কারণটা হচ্ছে রাবার ব্র্যান্ডের গঠন খুব শক্ত এবং অমসৃণ। যার কারণে চুলে অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হয়। চুল যদি কেউ রাবার ব্র্যান্ড দিয়ে বাদে তখন চুলের ওপর টান পড়ে, যা চুলের ভঙ্গুরতা বাড়িয়ে দেয়।
যার ফলে চুল সহজে ভেঙ্গে যায় এবং আস্তে আস্তে চুল পড়ার হারও বাড়তে থাকে। বিশেষ করে, কেউ যদি নিয়মিত রাবার ব্যান্ড দিয়ে চুল বাধে তাহলে চুল দুর্বল হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি চুল আরো দ্রুত পড়া শুরু করে।
এটা সমাধান হিসেবে কাপড় দিয়ে মোড়ানো ব্যান্ড ব্যবহার করবেন। কারণ এটা চুলের জন্য অনেক মৃদু এবং অনেক বেশি সুরক্ষিত। এটি চুলের ক্ষতি ও চুলে ঘর্ষণ কমাতে সহায়ক।
চুলের স্বাভাবিক বৃদ্ধি এবং স্বাস্থ্য বজায় রাখতে অবশ্যই চুল কখনো টাইট করে বাধবেন না। এজন্য চুল একটু ঢিলেঢালা করে বাধবেন। পরিশেষে এতোটুকুই বলবো যে, চুল পড়া রোধ করতে হলে রাবার ব্যান্ডের পরিবর্তে কাপড়ে মোড়ানো ব্যান্ড ব্যবহার করা উচিত।
৩. চুল খুব শক্ত করে বাঁধা
চুল খুব শক্ত করে বাধলে, বিশেষ করে টাইট করে জুটি বা খোঁপা করলে চুল পড়ে যায়। কারণ চুল খুব শক্ত করে বাধার সময় চুলের গোড়ায় প্রচুর চাপ পড়ে, যা স্বাভাবিকভাবে চুলের শিকড়কে দুর্বল করে দেয়।
হেয়ার লাইনে ( চুলের সামনের অংশে ) এই টানের ফলে চুল পড়ার হার অনেক বেড়ে যায়। ডাক্তারি বাসায় এই ধরনের চুল পড়াকে Traction Alopecia বলা হয়।
Traction Alopecia তে হেয়ার লাইনের কাছ থেকে চুল পড়া শুরু হওয়ার পাশাপাশি ধীরে ধীরে চুলের ঘনত্ব কমে যায় এবং মাথার ত্বক স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
এ সমস্যার সমাধানের জন্য চুল খুব শক্ত করে বাধা যাবে না। এর পরিবর্তে চুল ঢিলেঢালা করে বাধা উচিত। তাছাড়া আপনি চাইলে চুলের স্টাইল পরিবর্তন করতে পারেন। কারণ এটি করলে একক কোন স্থানে চুলের ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়বে না। অর্থাৎ চুলের সঠিক যত্ন এবং চুলের স্বাস্থ্য সুরক্ষার মাধ্যমে Traction Alopecia প্রতিরোধ করা সম্ভব।
৪. কন্ডিশনার ব্যবহার না করা
আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন, যারা চুলে শ্যাম্পু করার পর কন্ডিশনার ব্যবহার করেন না। এবং এটাকে অনেকে কম গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। শ্যাম্পু করলে মাথা থেকে ধুলাবালি, ময়লা এবং অতিরিক্ত তেল সরে যায়। এবং চুলে থাকা প্রাকৃতিক তেল যা চুলকে মসৃণ ও সুরক্ষিত রাখে সেটিও দূর হয়ে যায়।
যার ফলে চুল শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে পড়ে। এ সমস্যার সমাধানের জন্য প্রয়োজন কন্ডিশনার ব্যবহার করা। চুলে শ্যাম্পু করার পর কন্ডিশনার ব্যবহার করলে চুল আবারও মসৃণ ও সুরক্ষিত হয়।
কারণ হচ্ছে কন্ডিশনার চুলের শুষ্কতা দূর করে এবং চুলে প্রাকৃতিক তেলের মতো একটি স্তর তৈরি করে। অর্থাৎ এই স্তরটি চুলের ভেতর ঘর্ষণ কমায়, পাশাপাশি এর ফলে চুল খুব কম ভাঙ্গে এবং চুলে জট বাঁধে না।
চুলের রুক্ষতা কমানো, আরো ঝলমলে এবং স্বাস্থ্যকর করে তোলার জন্য অবশ্যই কন্ডিশনার ব্যবহার করা উচিত।
পরিশেষে এতোটুকুই বলবো যে, শ্যাম্পু করার পর চলে কন্ডিশনার ব্যবহার করা কখনোই বাদ দেওয়া উচিত নয়। কারণ এটি চুলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে বজায় রাখে, পাশাপাশি চুলের স্বাস্থ্য রক্ষা এবং চুলকে আরো মজবুত করে তুলতে সাহায্য করে।
No Comment! Be the first one.